রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:০৬ অপরাহ্ন

তেল শূণ্য তিন বছর, ডিপো সংস্কারের নামে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পায়তারা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রায় ৩ বছর থেকে তেল শূণ্য অবস্থায় পড়ে আছে ভাসমান দুটি তেলের বার্জ। তেল শূণ্য থাকায় জ্বালানি সংকট ও ন্যায্য মূল্যে তেল কিনতে হিমশিম খাচ্ছে এ অঞ্চলের ৮০ভাগ কৃষক। জ্বালানি তেল না থাকায় বৃহত্তর রংপুর বিভাগের ৪ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবি খুব দ্রুত আবারো এই ভাসমান দুটি তেল ডিপো চালু করার।

এদিকে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে তেল ডিপোতে কাজ করা শ্রমিকরা এখন বেকার অবস্থায় আছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল না থাকায় বাঘাবাড়ি, পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন ডিপো থেকে ১ লড়ি তেল চিলমারীতে আনতে প্রায় ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে ডিলারদের। এছাড়াও স্থানভেদে খরচ কমবেশি হয়ে থাকে। একদিকে অতিরিক্ত খরচ অন্যদিকে চড়া মূল্যে তেল কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।

সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে চিলমারী উপজেলায় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের তিনটি বার্জ চালু করা হয়েছিল এই অঞ্চল সহ গোটা রংপুর বিভাগের ডিজেল ও কেরোসিন তেলের চাহিদা মেটাতে। ওই সময় অভ্যন্তরিণ কারণে পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের বার্জটি অন্যত্র নিয়ে যায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় চিলমারীসহ এই অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে তেল সরবরাহের পর গেলো তিন বছর ধরে তেলশূণ্য অবস্থায় পড়ে আছে মেঘনা ও যমুনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের দুটি বার্জ।

দায়িত্বশীল একটি মাধ্যমে বলছে, বর্তমানে তেল ডিপো দুটি সংস্কারের নামে এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে পায়তারা করছেন ডিপো কর্তৃপক্ষ। এতে এখানেই সংস্কার করার দাবি জানিয়ে ডিপো সরাতে দেননি স্থানীয় তেল ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিপূর্বে বিভিন্ন অযুহাতে যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের একটি বার্জ হেগী-১ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের বার্জ হেগী-৪ নিয়ে যাওয়া হলেও তা চিলমারীতে আর পাঠানো হয়নি। পূর্বে নিয়ে যাওয়া বার্জদুটি না পাঠিয়ে আবারো বাকি দুটি বার্জ বিভিন্ন অযুহাতে সরিয়ে নেয়ার পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ডিপো সূত্রে জানা গেছে, যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড একটি জাহাজ সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে তেল নিয়ে এসেছিল এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এর একটি জাহাজ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তেল নিয়ে চিলমারী এসেছিল তবে তা দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আর সেই থেকে চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল সরবরাহ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। চিলমারী ভাসমান ডিপো যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের বর্তমান বার্জটিতে ৫লক্ষ ২৫ হাজার লিটার ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর বার্জে ৪লক্ষ ৪৫ হাজার লিটার তেল ধারন করতে পারে।

থানাহাট ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ডিপোতে তেল না থাকায় আমাদের বেশি দামে তেল কিনতে হচ্ছে। আর যদি ডিপো থেকে তেল কিনতাম তাহলে কম দামে ক্রয় করতে পারতাম। এখন সরকারের কাছে দাবী খুব দ্রুত আবারও এই ডিপো চালু করা হউক।

চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতীর চরের গয়ছল হক জানান, কয়েক বছর ধরে ডিপোতে তেল না থাকায় বাইরে থেকে তেল কিনে আনতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

স্থানীয় ডিলার ও তেল ব্যবসায়ী জোবাইদুল ইসলাম সুইট জানান, তেল না আসায় আমরা তেল ব্যবসায়ীরা হতাশ। এই তেল না আসার কারণে প্রান্তিক কৃষকরা সাথে নৌকার মাঝিরা বিপাকে রয়েছেন। তাদের এখন বাইরে থেকে তেল নিয়ে আসতে বেশি দাম পড়ছে।

যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের এজিএম জাহিদ মুরাদ বলেন, একটি টিম চিলমারী ভাসমান ডিপোতে পরির্দশনে গিয়েছিল তারা রিপোর্ট দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, তবে ভাসমান ডিপোর স্থলে শোর্ড/শোর ডিপো স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com